শাইখ ড. আলী তানতাভী রহঃ, আলি আল তানতাভি (১২ জুন ১৯০৯—১৮ জুন ১৯৯৯) একজন সিরিয়ান ফকিহ, লেখক এবং বিচারক এবং বিংশ শতাব্...
শাইখ ড. আলী তানতাভী রহঃ, আলি আল তানতাভি (১২ জুন ১৯০৯—১৮ জুন ১৯৯৯) একজন সিরিয়ান ফকিহ, লেখক এবং বিচারক এবং বিংশ শতাব্দীতে তিনি ইসলামের প্রচার ও আরবি সাহিত্যের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিবেচিত হন। তিনি তারুণ্য থেকে ১৯৪০ সাল অবধি সিরিয়া, ইরাক এবং লেবাননে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করেছেন। তারপর তিনি আইন পেশায় যোগ দেন। ইসলামের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৯০ সালে বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন। পরিচিতি বিংশ শতাব্দিতে যে সকল আরব মনীষী তাদের কলম আর যবানের মাধ্যমে দাওয়াতের ময়দানে বিশাল বড় অবদান রেখেছেন তাদের অন্যতম হলেন শায়েখ আলী বিন মুস্তফা আত-তানতাবী। সংক্ষেপে তিনি আলী তানতাবী নামেই সমধিক পরিচিত। ১৯০৯ সালে সিরিয়ার দামেস্কে অনুগ্রহণ করেন। তার বাবা শায়েখ মুস্তফা তনতাবি ছিলেন সিরিয়ার একজন নামকরা আলেম। দামেস্কের ফতােয়া প্রদানের দায়িত্ব তার কাছে অপিত ছিল। তার মায়ের বংশও ছিল অত্যন্ত খ্যাতিমান ও অভিজাত। ষােল বছর বয়সেই তার পিতা মারা যান। পরিবারে তখন তাঁর মা এবং তারা পাঁচ ভাইবােন। তাদের ভরণ-পােষণের দায়িত্ব নেওয়ার মানসে তিনি পড়াশােনা ছেড়ে দেওয়ার মনস্থ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলার দয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন এবং পুনরায় পড়াশােনায় মন দেন। ১৯৩১ সালে শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু। সেসময় তিনি আল আইয়াম' নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। সত্য কথনের দায়ে তৎকালীন সরকার সেটি বন্ধ করে দেয়। ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত তিনি সিরিয়াতেই শিক্ষকতার পেশায় যুক্ত থাকেন। সত্যবাদিতা আন্ন সৎসাহসের জন্য এই সময় তাকে অনেক দুর্ভোগ পােহাতে হয়। তার উপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাপটা বয়ে যায় । ১৯৩৬ সালে তিনি ইরাক গমন করেন। সেখানে বাগদাদের একটি কলেজে শিক্ষক হিসেবে নিয়ােগ পান। এখানকার স্মৃতি নিয়েই পৱৰ্তীতে তিনি তার বিখ্যাত বাগদানঃ মুশাহাদাত ওয়া যিকরিয়াত' গ্রন্থটি রচনা করেন। কয়েক বছর পর তিনি অৰািৰ মাতৃভূমি সিরিয়ায় ফিরে যান এবং দামেস্কে শিক্ষকতা শুরু করেন। সেসময় সিরিয়া ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। তিনি এর বিরুদ্ধে সােচ্চার ছিলেন। দুঃসাহসিকতার জন্য তাকে তখন অনেক দুর্ভোগ সহ্য করতে হয়। জার্মানির হাতে যখন ফ্রান্সের পতন হয় তখন তিনি জ্বালাময়ী একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেখানে কেবলই ফাকাবুলি । তাদের প্রজ্বলিত অগ্নি জ্বালাতে পারে না। তাদের ছোড়া বুলেট আঘাত হানতে পারে না। যদি তাদের মাঝে কল্যাণকর কিছু থাকতাে তবে জার্মান কখনও তাদের। রাজধানী পদানত করতে পারতাে না। তার এই অগ্নিণ্ঠের ভাষণ সেসময় সিরিয়ার লােকদের ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বেশ উজ্জীবিত করেছিল। মূলত | সত্য প্রকাশে তিনি ছিলেন আপােষহীন। ন্যায়ের পক্ষে সব সময় বলিষ্ঠ কণ্ঠের অধিকারী। এই ঘটনার পর তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে বিচারকার্যের সাথে সম্পৃক্ত হন। এবং দীর্ঘ সময় | বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯৬৩ সালে সৌদির গমন করেন। সেখানে | একটি কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্বে নিযুক্ত হন। যা বর্তমানে ইবনে সউদ বিশ্ববিদ্যালয় নামে | পরিচিত। এছাড়াও সৌদি অবস্থানকালে তিনি বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনস্টিটিউটে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে ভাষণ প্রদান কৱেন । ড. আলী তানতাবীকে আল্লাহ তাআলা অসাধারণ | লেখনী শক্তি দান করেছিলেন। যতােদিন বেঁচে ছিলেন দুহাতে লিখে গিয়েছেন। তার প্রায় সব লেখাই প্রথমে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে সেগুলােকে সংকলিত করে এহের। আকার দেওয়া হয়। তার বিখ্যাত থিয় হল, আবু বকর সিদ্দিকিন (১৯৩৫), আখৰৰু উমর (১৯৫৯), আ'লামুত তারিখ (১৯৬০), বাগদাদঃ মুশাহাদাত ওয়া যিকরিয়তি (১৯৬০), তারিফ আম বিথিনীল ইসলাম (১৯৭০), আলজামেউল। উমাবি ফি দিমাশক (১৯৬০), হেকায়াত মিনাত তারিখ (১৯৬০), রিজাল মিনতি তারিখ (১৯৫৮), সুওয়ার ওয়া খাওয়াতির (১৯৫৮), ফি সাবিলিল ইসলাহ (১৯৫৯), কাসাস মিনাত তারিখ (১৯৫৭), কাসাস মিনল হায়াত (১৯৫৯), মাআন নাস (১৯৬০), মাকালত ফি কালিমাত (১৯৫৯), মিন হাদিসিন নাফস (১৯৬০), হুতাফুল মাজদি (১৯৬০) শেষ বয়সে আলী তানতাবী শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েন। হাসপাতাল আর বাসায়। অনেক বেশি দেীড়াদৌড়ি করতে হয় তাকে। মৃত্যুর বহর যা খুব বেড়ে গিয়েছিল।১৯৯১ সাল ১৪ রোজ শুক্রবার এই মহা মনীষী জেদ্দার। বাদশা ফাহাদ হাসপাতালে পৃথিবীর মায়া পরিত্যাগ করে পরকালের অনন্ত পথে পাড়ি জমান। পরের দিন মসজিদুল হারামে জানাযা শেষে মক্কাতুল মুকাররমার কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
Hello eBoighar member!
Hello eBoighar member!
Hello eBoighar member!
Are you sure?
By clicking “Accept All Cookies”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and assist in our marketing efforts.