আহমেদ হুসেইন দিদাত (গুজরাটি: અહમદ હુસેન દીદત; উর্দু: احمد حسین دیدات আরবি: احمد حسين ديدات), যিনি আহমেদ দিদাত নামেও পরিচিত (১...
আহমেদ হুসেইন দিদাত (গুজরাটি: અહમદ હુસેન દીદત; উর্দু: احمد حسین دیدات আরবি: احمد حسين ديدات), যিনি আহমেদ দিদাত নামেও পরিচিত (১১ জুলাই, ১৯১৮ - ৮ আগস্ট, ২০০৫) ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন মুসলিম চিন্তাবিদ এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের একজন বক্তা। খ্রিষ্টান সুসমাচার প্রচারণাকারীদের সাথে অসংখ্য বিতর্ক এবং ইসলাম, খ্রিষ্টান ধর্ম এবং বাইবেল এর উপর তার ভিডিওর জন্য তিনি বেশি পরিচিত। আন্তর্জাতিক ইসলাম ধর্মপ্রচারকারী প্রতিষ্ঠান, আইপিসিআই প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইসলাম ও খ্রিষ্টান ধর্মের উপর কিছু বহুল বিক্রিত পুস্তিকা লিখেন। ১৯৮৬ সালে, তিনি ৫০ বছর ধরে ধর্ম প্রচার করার জন্য কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরষ্কার লাভ করেন। জীবনের প্রথমার্ধ (১৯১৮ - ১৯৪২): দিদাত ১৯১৮ সালে, ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভূক্ত সুরাট এর তাদকেশর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের কিছু সময় পর তার পিতা দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যান। ৯ বছর বয়সে দিদাত ভারত ত্যাগ করে তার পিতার সাথে বর্তমান কুয়াজুলু-নাতালে বসবাস করতে যান। তার দেশ ত্যাগের কয়েক মাস পর তার মাতা মৃত্যুবরণ করেন। সেখানে তিনি তার অধ্যায়নের দিকে মনযোগ প্রদান করেন এবং ভিন্ন ভাষার প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তার বিদ্যালয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন এবং ৬ ষ্ঠ শ্রেণি সম্পন্ন করার পূর্ব পর্যন্ত উত্তীর্ণ হন। কিন্তু অর্থনৈতিক কারণে ১৬ বছর বয়সে তাকে বিদ্যালয় ব্যাগ করে কাজ করা শুরু করতে হয়। ১৯৩৬ সালে, আসবাবপত্র বিক্রেতা হিসেবে কাজ করার সময় তিনি একটি খ্রিষ্টান ধর্মের সম্মেলনে একটি খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারকারী দলের সাথে পরিচিত হন, যারা মুসলিমদের খ্রিষ্টান ধর্মে ধাবিত করার চেষ্টা করার সময়ে অনেক সময়েই তারা ইসলাম ধর্মে ধাবিত করতে মুহাম্মাদ এর বিরুদ্ধে “তরবারি ব্যবহার করার” অভিযোগ করত। এ ধরনের অভিযোগ তাকে রাগান্বিত করে এবং তূলনামূলক ধর্মতত্ত্বে তার আগ্রহ সৃষ্টি করে। দিদার তার বন্ধুর বেসমেন্টে পড়ার জন্য কোনো কিছু অনুসন্ধানের সময় রহমতুল্লাহ কিরানভি এর লেখা ইযহারুল হক (অনুবাদ: সত্য উম্মেচন) নামক বইটি খুজে পান এবং তা থেকে তার ধর্ম বির্তকে আরো বেশি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বইটিতে ভারতে প্রায় ১০০ বছর আগে খ্রিষ্টার ধর্মপ্রচারকারীদের চেষ্টার একটি ধারাবিবরণী ছিল। বইটি তার উপর জড়ালো প্রভাব ফেলে এবং তিনি একটি বাইবেল ক্রয় করেন এবং ধর্মপ্রচারের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা এবং বিতর্ক করেন, যাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি পূর্বে অক্ষম ছিলেন। তিনি নামক অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম ধাবিত এক বাসিন্দার কাছ থেকে ইসলামিক অধ্যায়ন শিক্ষা গ্রহণ করেন। মি.ফেয়ারফ্যাক্স তার পাঠদানের জনপ্রিয়তা দেখে বাইবেল এবং কিভাবে খ্রিষ্টানদের কাছে ইসলাম প্রচার করতে হয় সে সংক্রান্ত একটি অতিরিক্ত পাঠদান শুরু করেন। এর কিছু সময় পর দিদাতকে পাঠদান সভাটিকে থেকে বের করে দিতে হয়। এ পর্যায়ে দিদাত বাইবেল সম্পর্কে ভালোই জ্ঞান অর্জন করেছেন এবং তিনি পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেন, যা তিনি তিন বছর ধরে চালিয়ে যান। দিদাত কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রশিক্ষণ নেননি। প্রাথমিক ধর্মপ্রচারমূলক কাজ: দিদাত এর প্রথম ভাষণ ১৯৪২ সালে ডারবানের একটি সিনেমা হলে অনুষ্ঠিত হয়, যার নাম ছিল “মুহাম্মদ: শান্তির বার্তাবাহক”। তার প্রাথমিক ধর্ম প্রচারমূলক কাজের ক্ষেত্রে একটি সুবিধা হিসেবে ছিল জুমা মসজিদের নির্দেশিত সফর। বিশাল এবং সুসজ্জিত জুমা মসজিদ দক্ষিণ আফ্রিকার পর্যটনের জন্য জনপ্রিয় শহর ডারবানের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। আন্তর্জাতিক পর্যটকদের বড় একটি অংশের উদ্দেশ্যে মধ্যাহ্নভোজন, বক্তৃতা এবং বিতরণের কার্যক্রম পরিকল্পনা করা হয়। এ পর্যটকদের অনেকের ইসলামের প্রথম দর্শন। দিদাত নিজেও প্রদর্শকদের একজন ছিল, যিনি পর্যটকদের আপ্যায়ন করেন এবং তাদের ইসলাম এবং ইসলামের সাথে খ্রিষ্টান ধর্মের সম্পর্কের বিষয়ে জানান। ১৯৪৯ সালে, দিদাত পাকিস্তানে পরিবার সহ চলে আসেন এবং সেখানে তিনি চকের কাছে ৩ বছর বসবাস করেন। পাকিস্তান টেলিভিশনে তার একটি সাক্ষাৎকার অনুসারে, তিনি একটি ইসলামিক রাষ্ট্রের একজন বড় সমর্থক। আইপিসিআই এবং আস-সালাম (১৯৫৬-১৯৮৬): দিদাত এর কাছের বন্ধুদের মধ্যে ছিল গোলাম হুসেইন ভাঙ্কার এবং তাহির রাসূল, যাদের অনেকে “দিদাত এর কর্মজীবনের অপ্রকাশিত নায়ক” হিসেবে অভিহিত করে। ১৯৫৭ সালে, তারা ৩ জন ইসলামের উপর অনেক বই মুদ্রণ এবং নতুন ইসলাম গ্রহণ করা মুসলিমদের জন্য পাঠদান শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক ইসলামিক প্রচার কেন্দ্র পতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী বছর, দিদাত দক্ষিণ নাতালে অবস্থিত শহরে দান হিসেবে গ্রহণ করা ৭৫ হেক্টরের এক খন্ড জমিতে একটি শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আপিসিতে মানুষের অংশ্রগহণ এবং তহবিলের অভাবে সেটি বিফল হয় এবং ১৯৭৩ সালের মুসলিম যুব আন্দোলন সেটি দখল করে নেয়। দিদাত তারপর ডারবানে ফিরে এসে সেখানে আইপিসির কার্যক্রম প্রসারিত করেন। অসুস্থতা এবং মৃত্যু: ১৯৯৬ সালের মে মাসের ৩ তারিখে, একটি সেলিব্রাল ভাস্কুলার দুর্ঘটনায় তার মস্তিষ্ককাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তিনি কাধের নিচ থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন, যার ফলে তিনি খাদ্য গ্রহণ এবং কথা বলার ক্ষমতা হারান।[২০] তাকে রিয়াদে কিং ফইসাল হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে তিনি সম্পূর্ণভাবে সজ্ঞানে ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি চোখের নাড়াচড়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে শিখেন, যে পদ্ধতিতে তিনি তার প্রতি পড়ে শোনানো অক্ষরের প্রতি সাড়া দিয়ে একটি চার্ট ব্যবহার করে শব্দ এবং বাক্য তৈরি করেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় তার স্ত্রী, হাওয়া দিদাত এর যত্নে তার বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থেকে এবং অন্যদের দাওয়া (ইসলাম প্রচার) কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রেরিত করে জীবনের শেষ ৯ বছর অতিবাহিত করেন। তিনি সমর্থকদের শত শত পত্র পান এবং স্থানীয় এবং বিদেশ থাকা আসা সমর্থকরা তাকে দেখতে এবং ধন্যবাদ জানাতে আসেন। ২০০৫ সালের আগস্ট মাসের ৫ তারিখে কুয়াজুলু-নাতাল এর ভেরুলাম এর ট্রেভেনেন রাস্তায় তার বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ভেরুলাম কররস্থানে তাকে কবর দেওয়া হয়। হাওয়া দিদাত ২০০৬ সালের আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে ৮৫ বছর বয়সে তার বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। তার জানাজার নামাজের ইমাম হিসেবে ছিলেন ইসমাইল ইবনে মুসা মেঙ্ক।
Hello eBoighar member!
Hello eBoighar member!
Hello eBoighar member!
Are you sure?
By clicking “Accept All Cookies”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and assist in our marketing efforts.